Please enable javascript.Soldier’s Body Found 50 Years After,অর্ধদশক আগে মৃত জওয়ানের দেহাবশেষ - soldier's body found 50 years after he went missing in india-china border - eisamay

অর্ধদশক আগে মৃত জওয়ানের দেহাবশেষ

EiSamay | 21 Jul 2018, 10:00 am
Subscribe

চাপ চাপ বরফের স্তরের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে আছে প্রায় কঙ্কালসার একটি হাত৷ একটু দূরে দেখা যাচ্ছে মানব শরীরের কিছু অংশও৷

5
অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়, নয়াদিল্লি

চাপ চাপ বরফের স্তরের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে আছে প্রায় কঙ্কালসার একটি হাত৷ একটু দূরে দেখা যাচ্ছে মানব শরীরের কিছু অংশও৷ কিন্ত্ত এখানে হঠাৎ মানব দেহ? ভূ-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় কুড়ি হাজার ফুট উপরে? কোথা থেকে এল? খুঁজতে খুঁজতে পাওয়া গেল বরফের তলায় চাপা পড়ে থাকা একটি বিমানের ধ্বংসাবশেষও৷ যা দেখে কার্যত হতবাক ভারত-চিন সীমান্তে হিমাচল প্রদেশের ঢাকা হিমবাহে পা রাখা পর্বতারোহী অভিযাত্রী দল৷ ‘নেহরু মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের’ পর্বতারোহী দলের তরফে তৎক্ষণাৎ যোগাযোগ করা হয় নিকটবর্তী সেনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে৷ সেনার বিশেষ উদ্ধারকারী দল ঘটনা স্থলে গিয়ে দেখতে পায় যে, বরফের খাঁজের মধ্যে থেকে যাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ বেরিয়ে আছে, তিনিও সম্ভবত একজন সেনা জওয়ান৷ তখনই সেনা কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারেন যে, এভাবেই বরফের খাঁজে শুয়ে আছেন আরও বহু হতভাগ্য সেনা জওয়ান, যাঁদের নিয়ে ১৯৬৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি চণ্ডীগড় থেকে লেহ যাত্রা করেছিল ভারতীয় বায়ুসেনার মালবাহী বিমান এএন-১২৷

হিমাচল প্রদেশের রোহতাং পাসের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় ওই বিমান দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয় খারাপ আবহাওয়ার কারণে৷ তারপরে তা ভেঙে পড়ে বরফের চাঁইয়ের মধ্যে, ঢাকা হিমবাহের বিভিন্ন অংশে৷ বিমানে তখন ছিলেন ৯৮ জন জওয়ান এবং চার জনের এক অভিজ্ঞ বিমান চালক দল৷ এবার তাদের মধ্যে কোনও একজন নাম না জানা হতভাগ্যর দেহ উদ্ধার করেছেন সেনা জওয়ানরা৷ এর আগে ২০০৩ সালে উদ্ধার কার্যের সময়ে তিনটি মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল৷ ২০১২ সালে পাওয়া গিয়েছিল এক সেনা জওয়ানের পরিচয় পত্র৷ পরের বছর ২০১৩ সালে উদ্ধার হয়েছিল আর এক সেনা জওয়ানের দেহ, পকেটে থাকা পরিচয় পত্র দেখে যাকে হরিয়ানা নিবাসী হাবিলদার জার্ণেল সিং বলে চিহ্নিত করা হয়৷ পাঁচ বছর পরে আরও একবার উদ্ধার হল একটি দেহ৷

উল্লেখ্য, ১৯৬৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বায়ুসেনার মালবাহী বিমানটি দুর্ঘটনাগ্রস্ত হওয়ার পরে অত্যন্ত দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় বেশ কয়েক মাস উদ্ধারপর্ব তেমন ভাবে চালানোই সম্ভব হয়নি৷ এর পরে বহুবার ওই বিমানের যাত্রী সেনা জওয়ানদের সন্ধানে উদ্ধারকার্য চালানো হয়েছে, কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে তা সাফল্য পায়নি৷ তা ছাড়া অত উঁচুতে বরফের চাঁইয়ের মধ্যে থেকে একটা আস্ত বিমানকে টেনে তোলা কার্যত অসম্ভব বুঝেও কিছুটা পিছিয়ে এসেছিলেন সেনা কর্তৃপক্ষ৷

ক্রমাগত বরফ পড়তে থাকায় বিমানের ভিতরে থাকা হতভাগ্য জওয়ানদের মৃতদেহগুলি বরফের কতটা তলায় চলে গিয়েছে, তা বোঝা কার্যত দুষ্কর৷ সেনার বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কুকুর নিয়ে ঘটনা স্থলে গিয়ে তল্লাশি চালিয়েও ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছুই জোটেনি৷ ফলে একদিকে যেমন উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি এই জওয়ানদের মৃতদেহ, তেমনি অন্যদিকে বরফের চাঁই সরিয়ে তুলে আনা যায়নি ধ্বংসপ্রাপ্ত বিমানের অবশিষ্টাংশও৷

এরই মাঝে প্রায় পঞ্চাশ বছর পরে আবার নতুন করে ওই বিমানের অবশিষ্টাংশ কী ভাবে বরফের মধ্যে থেকে মাথা চাড়া দিয়ে উঠল, কী ভাবেই বা বেরিয়ে এল সেনা জওয়ানের মৃতদেহের একাংশ, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিস্তর৷ এ সম্পর্কে নিশ্চিত ভাবে কিছুই বলতে পারছে না সেনা৷

বায়ুসেনার সঙ্গে যৌথ ভাবে হিমাচলের ঢাকা গ্লেসিয়ারের বিস্তীর্ণ অংশে আবার পুরোদস্ত্তর তল্লাশি অভিযান চালানোর ভাবনা শুরু করছে সেনা৷ পুরো বিষয়টি অবশ্য নির্ভর করছে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিশেষ অনুমোদনের উপরে৷ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘এত দুর থেকে বোঝা সম্ভব নয় যে, কিভাবে বরফের তলা থেকে এই বিমানের ধ্বংসাবশেষ আবার মাথা চাড়া দিল৷ একইরকম ভাবে এটাও বলা সম্ভব নয় যে, কিভাবে আবার একটি মৃতদেহ বরফের তলা থেকে বেরিয়ে এল৷ ঘটনাস্থলে সেনার পর্যবেক্ষক দল আছে৷ তারাই পুরো পরিস্থিতিটা খতিয়ে দেখছেন৷ তার পরেই পরবর্তী সিন্ধান্ত গ্রহণ করা হবে৷’
মন্তব্য করুন

পরের খবর

Nationসম্পর্কে আরও বিস্তারিত ও নতুন খবর জানতে ক্লিক করুন। সব ধরনের ব্রেকিং, আপডেট এবং বিশ্লেষণ সবার প্রথম বাংলায় পড়তে ক্লিক করুন Bengali Newsএই সময় ডিজিটাল